করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম - গর্ভাবস্থায় করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম
করমুচা ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের পীড়ায় সকলেরই অজানা। কারণ করমুচা ফলটি বাজারের ৮-১০ টা ফলের মতো জনপ্র্রিয় ও ফল নয়। তাই আমাদের মধ্যে অনেকে বলতে পারবে যে করমুচা ফল ডাকতে কেমন হয়।
করমুচা ফলটি আমার মতে ডাকতে আঙ্গুর ফলের মতো। করমুচা ফলটি ভীষণ টক স্বাদের এটি ডাকতে লালচে-সবুজ রঙের। সাধারণত করমুচা ফলটি, এশিয়া ও আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ান উপমহাদেশগুলোতে পাওয়া যায়। করমুচা ফলটি আকারে অনেক ছোট কিন্তু খেতে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর।
করমুচা ফল খাওয়ার নিয়ম ও করমুচা ফল খাওয়ার উপকারিতা ও গর্ভবস্থায় করমুচা ফল খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি বিস্তারিত পড়ুন।
করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন
করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম ও কখন এবং কোন সময় ফলটি খেলে স্বাস্থ জন্য ভালো হবে। এই সকল নিয়ম-কারণ সম্পর্কে আমরা এখন বিস্তারিত বলতে যাচ্ছি। বর্তমান সময়ে করমচা ফল ও গাছটি অবহেলিত ও প্রায় বিলুপ্ত একটি গাছ।
কিন্তু করমচা ফলটির পুষ্টিগুণ কিন্তু মোটেও অবহেলা করার মতো না। আপনি হয়তো জানেন না প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় আছে শর্করা-১৪ গ্রাম, প্রোটিন-০.৫ গ্রাম, ভিটামিন সি- ৩৮ মিলিগ্রাম,রিবোফ্লেভিন-০.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ-৪০ আইইউ, ম্যাগনেসিয়াম-১৬ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন-০.২ মিলিগ্রাম, আয়রন-১.৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম-২৬০ মিলিগ্রাম, কপার-০.২ মিলিগ্রাম।
করমচা ফলের মধ্যে এই সকল গুণাবলীর জন্য এটি আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
১.সাধারণত করমচা ফলে কোনো পরিমান ফ্যাট বা কোলেস্টেরল নেই। যার কারণে করমচা ফলটিকে ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য কার্যকর ও উপকারী ফল বলা হয়।
২. করমচা ফলে রয়েছে পটাশিয়াম যেটি আপনার শরিলের হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়াও এটি আপনার শরীলের রক্তচাপ ও রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।
৩. করমচা ফলেটি খেতে টক স্বাদের এবং এই ফলে রয়েছে ভিটামিন-সি। এটি আপনার খাবার রুচি ফিরায় এবং জ্বর, ডায়রিয়া, আমাশয়ের রুগীদের জন্য সাহায্য কারী ফল এটি।
৪. আপনার শরিলের লিভার ও কিডনির সমস্যা থাকলে এটি প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এই ফল। লিভার ও কিডনির সমস্যা থাকলে খুব দ্রুত সারাতে সক্ষম এই ফলটি।
৫. করমচা ফলে থাকা পটাশিয়াম ইলেক্ট্রোলাইটের আমাদের শরীলের ক্ষত স্থানের
রক্তপাত কমিয়ে ক্ষত স্থানকে দ্রুত সারাতে সাহায্য করে।
৬. করমচা ফল খাওয়ার ফলে আপনার পেটের কৃমির সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
৭. আপনার বদহজম সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে এই ফল খেলে আপনার পেটের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
৮. আপনি হয়তো জানেন এই ফলে থাকা ভিটামিন-সি আপনার শরীলের ক্লান্তিভাব দূর করে দেয়।
৯. করমচা ফলে ভিটামিন-এ রয়েছে যা আপনার চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকার। তাই এই ফলটি খাওয়ার ফলে আপনার দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকবে।
হয়তো আপনারা বুজতে পেরেছেন করমুচা ফলের গুলাগুন কতটুকু। করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম মেনে যদি আপনারা এই ফলটিকে খেতে পারেন,তাহলে এটা আপনাদের জন্যে ভালো।
করমচা ফলের গুনাগুন
বৈশিষ্ট:
করমচা গাছটি সাধারণত শক্ত কাঁটাওয়ালা এক ধরনের ঝোপঝাড় প্রকৃতির গাছ। সাধারণত ভাবে করমচা গাছটি প্রায় ২.৫-৩.০ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। করমচা গাছটির ফল কাচা অবস্তায় দেখতে গাঢ় সবুজ মনে হয়, এবং পাকলে লাল রঙ ধারণ করে।
বর্তমান সময়ে করমচা গাছে কিছু কিছু নতুন জাত দেখা যাচ্ছে। যে সকল করমচা জাত এখন দেখা যাচ্ছে এ জাতের ফল গুলো ডাকতে সাদা, কোনোটার ফলের রঙ সাদার মধ্যে গোলাপি আভা। আপনি যদি করমচা গাছটি গাছে ডাল বা পাতা ও ফল ছিঁড়লে সাদা দুধের মতো কষ বের হয়।
করমচা ফলটি সাধারণত জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে হয়ে থাকে। ফলটি বর্ষাকালে পেকে থাকে।
গুনাগুন:
করমচা ফলের অনেক গুনাগুন রয়েছে। কিন্তু এত গুনাগুন থাকা সত্ত্বেও আজকের দিনে এই ফলটি অনেক অবহেলিত ফল। কারণ করমুচা ফলটি বাজারের ৮-১০ টা ফলের মতো জনপ্র্রিয় ও ফল নয়।
কিন্তু এই ফলের অনেক পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে যেমনঃ এনার্জি-৬২ কিলোক্যালরি ,ম্যাগনেসিয়াম - ১৬ মিলিগ্রাম ,কার্বোহাইড্রেট -১৪ গ্রাম, প্রোটিন - ০.৫ গ্রাম, ভিটামিন এ - ৪০ আইইউ, পটাশিয়াম - ২৬০ মিলিগ্রাম, মিলিগ্রাম, আয়রন - ১.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি - ৩৮ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেভিন - ০.১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন - ০.২ কপার-০.২ মিলিগ্রাম।
এই শরীলের রক্ত চলাচল থেকে যত রকম সমস্যা আসে,সকল সমস্যার সমাধান দেয়।
করমচা খাওয়ার উপকারিতা
করমচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে করমচা ফলে কি ভিটামিন বিদ্যমান আসে সেটা জানতে হবে। করমচা ফলে অনেক ভিটামিন বিদ্যমান রয়েছে যা আমাদের শরিলের বিভিন্ন বিকাশ ঘটায়। ভিটামিন-এ এটা আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং চোখের সুস্থতা বজায় রাখে।
ভিটামিন-সি আপনার শারীরিক ক্লান্তিভাব দূর করে দেয় এবং আপনার শরীল সন্দর ও সতেজ রাখে।করমচা ফলটি টক স্বাদের যার কারণে আপনার মুখের খাবার রুচি ফিরিয়ে আনে। এবং আপনার যদি জ্বর, ডায়রিয়া, আমাশয় থেকে থাকে তাহলে এগুলাকে নির্মূল কিরে দেয়। এই ফলটি খেলে আপনার যদি পেটের কৃমির সমস্যা থাকে, তাহলে সেটাও নির্মূল হয়ে যাবে।
আপনার যদি বদহজম এর সমস্যা এবং পেটের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সেটাও নির্মূল করবে এই ফল। আপনার যদি রক্তচাপ ও রক্ত চলাচল সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে এই ফল এই সমস্যার জন্য উপকারী একটি ওষুধ।
সাধারণত যাদের ডায়বেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত আসেন, তারা যদি করমচা ফল খাওয়ার নিয়মে খান তাহলে এই রোগ গুলা থাকে রক্ষা পাওয়া যেতে পরে। বাজারে হয়তো আপনারা অনেক রকমের ফল ডাকতে পান। কিন্তু করমচা ফলে, যে সকল কার্যকর ভিটামিন আসে তা আর অন্য কোনো ফলে বিদ্যমান নয়।
আশা আপনারা বুজতে পারছেন যে করমচা ফল খেলে আপনাদের শরীলে কি প্রভাব পড়তে পারে।
গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা
একটি মেয়ে যখন গর্ভধারণ করে তখন থেকে তার মধ্যে অনেক রকম পরিবর্তন দেখা যায়। গর্ভধারণ অবস্তায় একটি মেয়েকে সুস্থ রাখাটা খুব প্রয়োজন। কারণে গর্ভধারণ করা অবস্তায় যদি একটি মেয়ে অসুস্থ হয়ে পরে তাহলে সেটি মা ও সন্তানের জন্য মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে।
তাই অবশই গর্ভধারণ করা অবস্তায় মেয়েদেরকে সুস্থ রাখাটা জরুরি। গর্ভাবস্থায় মেয়েদের মুখের রুচি হারাই যায় এবং তারা আগের মতো খেতে চাই না। এবং এই অবস্থায় মেয়েদের রক্তচাপ ও রক্তচলাচল স্বাভাবিক থাকে না। এই অবস্থায় মেয়েরা চোখে কিছু কিছু সময় ঝাপঁচা দেখে।
গর্ভাবস্থায় অবস্থায় মেয়েদের শরীল স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে না। এই সময়ে মেয়েদের শরীল দুর্বল হয়ে পরে,তাই এই সময়ে শরীল স্বাভাবিক রাখাটা দরকার। এই সময়ে মেয়েরা একটু হাতাহাতি করলে কিলান্ত অনুভব হয়। একটু হাতাহাতি করলে খুব তাড়াতাড়ি তাদের শরীল দুর্বল হয়ে পরে।
আর গর্ভাবস্থায় এই সকল সমস্যা থেকে একটু হলেও মুক্ত হতে হলে আমার মতে, সে যদি করমচা ফলটি খায়। তাহলে এই সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে। করমচা আপনার শরীলের মুখের রুচি নিয়ে আসে,রক্তচাপ ও রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখে ,শরীল দুর্বলতা দূর করে দেয় , শরিলের কিলান্ত অনুভব দূর করে, লিভার ও কিডনির সমস্যা দূর ইত্যাদি সকল সমস্যা দূর করতে করমচা ফলের ভূমিকা অপরিসীম।
শেষ কথা
করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম ও গর্ভাবস্থায় করমচা ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজ আমরা এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আসা করি করমচা ফল সম্পর্কে আপনাদের সকল তথ্য দিতে পেরেছি।