ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর উপায়

আপনারা অনেকেই আপনাদের চুল পড়া বন্ধ  করার উপায় জানতে চেয়ে সার্চ করে থাকেন। ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও  চুল গজানোর উপায়, নতুন চুল গজানোর উপায় জেনে নিন। সেই সাথে কিভাবে আপনার মাথার অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়, চুল লম্বা ও নতুন চুল গজানোর উপায় জানতে চান? তাহলে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ও নতুন চুল গজানোর উপায় সামনে চুল ঘন করার উপায় সকল বিষয়ে জানতে এই পোস্টটি পড়তে থাকুন।



সাধারণত চুল নারী ও পুরুষের উভয়ে অহংকার, যুগে যুগে অনেক কবি ও শিল্পী সাহিত্যিকরা কোন কালো রে রেশমি চুলের প্রেমে পড়ে কত মহাকাব্য লিখেছেন তা শেষ নেই। সাধারণত অপরিচ্ছন্ন আবহাওয়ার সাথে আমরা আমাদের চুলকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত অথচ চুলের প্রয়োজন যত্ন। তাই আমাদের এই পোস্টটি পড়লে আপনারা সুর নিয়ে আপনাদের সমস্ত অনিশ্চয়তা ভয় সকল সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।

ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর উপায়

চুল সাধারণত শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ  অংশ। আজকাল ইন্টারনেটে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ইন্টারনেটে সার্চ করছে। চুল বন্ধ করার উপায় নিয়ে ইন্টারনেটে সাধারণত বোঝাই করা বিভিন্ন নিয়ম ও কৌশল রয়েছে। অবশ্যই আপনাকে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের কোন গন্ডি নেই তাই যে কেউ নিজের মত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় বিষয়ক নির্দেশনা দিতে পারবে। 

সাধারণত এখন কার সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে অবৈজ্ঞানিক সম্মত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় বিষয়ক নির্দেশনা বিপরীতভাবে কাজ করে বা কাজ করেনা। এইজন্য আপনাকে সর্বদা অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে এবং চেষ্টা করবেন বৈজ্ঞানিক সম্মত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়টি বেছে নিতে। নিচে কিছু বৈজ্ঞানিক সম্ভবত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে বলে দেয়া হলো।

১. সুষম খাবার গ্রহণ:

চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে প্রথমে যে বিষয়টা আমাদের সকলকে খেয়াল রাখতে হবে সেটি হল সুষম খাবার গ্রহণ। সাধারণত গত দশকের তুলনায় এখন অবশ্যই মানুষ এর খাবারের পরিমাণ বেড়েছে কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই সকল খাদ্যের অবশ্যই পরিপূর্ণ সুষম খাবার নয়। সাধারণত চুলের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন হলো ভিটামিন সি এবং ডি। এজন্য আমাদের সকলকে বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ডি যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। 

আমাদের মধ্যেও অনেকে আছেন যারা বলে থাকেন চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন ই দরকার এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু আপনারা হয়তো অনেকে জানেন না যে চুলের গঠন প্রক্রিয়ায় ভিটামিন ই নেই বললেই চলে, তবে সামান্য পরিমাণ ভিটামিন এ পাওয়া যায়।

২. তেল ব্যবহার:

তেল চুলকে সুরক্ষিত ও মজবুত রাখে। আপনার মাথার চুল পড়া বন্ধ করা জন্য অবশ্যই আপনাকে মাথায় তেল ব্যবহার করতে হবে। মাথায় তেল এর কথা আসলে নারকেলের তেল এর কথা আগে আসে কারণ নাইকেলের তেলে রয়েছে ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় খনিজ ও ফ্যাটি অ্যাসিড। আপনার মাথাই নারকেলের তেল ব্যবহার করলে বা মালিশ করলে চুল কালো ঘন এবং চুল যত্ন ও মজবুত থাকে।

৩. নিশ্চিন্তা মুক্ত থাকা:

অবশ্যই দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ। সাধারণত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে আপনাকে প্রতিদিন অন্তত হলেও ৮ ঘন্টা ঘুম এবং দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা প্রয়োজন।


চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর উপায়- নতুন চুল গজানোর ঘরোয়া উপায়

এত পর আপনারা জানতে পেরেছেন যে যে কিভাবে চুল পড়া বন্ধ করা যায়। এখন আমরা জানবো কিভাবে চুল ঘন করা যায়। ঘন চুল আমাদের সকলেরই কাম্য। কিন্তু প্রতিনিয়ত আমাদের চুল ধুলো এবং দূষণের কারণে অত্যান্ত নোংরা হয়ে থাকে তাই অনেকের ক্ষেত্রে মাথায় প্রজাত চুল থাকা সত্ত্বেও চুল পাতলা হয়ে যায়। 

আবার যদি অতিরিক্ত চুল পড়ে যায় তাহলে আপনার চুলের ঘনত্ব দিনের হারিয়ে যেতে থাকে। এ সকল সমস্যা থেকে প্রতিকার পাওয়ার অনেক রকম উপায় রয়েছে। কিছু কিছু সহজ উপায় রয়েছে যেগুলো আপনারা পর্যায়ক্রমে করলে খুব দ্রুত চুলের ঘনত্ব ফিরে আসে। এখন কিভাবে চুল ঘন করতে হয় সেই সম্পর্কে বলব:

১. সাধারণত চুলের প্রোটিনের মাত্রা বাড়লে আমাদের চুলের ঘনত্ব ও বৃদ্ধি হয়। সাধারণত প্রাকৃতিক উপায় চুলের ডিম ব্যবহার করলে চুলের প্রোটিন বৃদ্ধি পায়। সাধারণত একটি ডিমের সাদা অংশ নিন। এরপরে আপনার পরিষ্কার করা চুলে খুব যত্ন সহকারে আপনার চুলের নিজ থেকে উপর পর্যন্ত মাখুন।

ডিম মাখা শেষ হলে মোটা দাঁতওয়ালা চিরনি দিয়ে খুব সাবধানে আপনার চুলটি আসলে নিন। এরপরে আপনি আপনার চুলে শাওয়ার ক্যাপ বা ঝুটি করে রাখেন। এবং এই ভাবেই ৩০ মিনিট রেখে পরিষ্কার নরমাল পানি এবং হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। আপনারা এইভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার চুলে ডিম ব্যবহার করলেই আপনার চুলের ঘনত্ব আস্তে আস্তে ফিরে আসবে।

২. সাধারণত ট্রিটমেন্ট ক্রিম ব্যবহার ও চুল ঘন করার উপায় গুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু অবশ্যই ক্রিমটি 1 চামচ মধু এবং প্রাকৃতিক অলি বেরা জেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে এর কার্যক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়ে যাবে।

৩. অবশ্যই চুল ঘন করার উপায় হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত একটি উপায় হচ্ছে তেলের মিশ্রণ ব্যবহার করা। নারিকেল তেলের সাথে তিলে তেল অলিভ অয়েলের সাথে ক্যাস্টার অয়েল অথবা ক্যাস্টর অয়েলের সাথে আমন্ড অয়েল এই রকম তেলের মিশ্রণে রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে আপনার চুলের ঘনত্ব এবং নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

৪. আমরা সাধারণত ভেজা চুল বা ভেজা মাথায় টয়লে ব্যবহার করে থাকি। এজন্য মাথায় কোনরকম গামছা বা পোড়াইলে দিয়ে ঢেকে রাখা যাবে না বরং চেষ্টা করতে হবে খোলামেলাই চুল রাখার জন্য। এতে করে আপনার চুল আগের থেকে অনেক ঘনত্ব বাড়বে।

ছেলেদের অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায়- ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার ওষুধ

অতিরিক্ত চুল পড়া নারী পুরুষের উভয়ের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চিন্তার বিষয়। প্রতিদিন যদি গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ টি চুল পড়ে যায় আপনার মাথা থেকে তাহলে অবশ্যই এটি অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়া বলে। এভাবে চুল পড়তে থাকলে আপনার মাথা আস্তে আস্তে টাক হয়ে যাবে।

অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে অনেকে প্রথমত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নেয়। কিন্তু আমরা প্রায় সবাই চাই পেশাদারী চিকিৎসা এড়িয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় বেশি গ্রহণযোগ্য আমাদের কাছে।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করতে নারকেলের তেল ব্যবহারের এর কোন বিকল্প নেই। কারণ নারকেলের তেলে এমন কিছু ভিটামিন রয়েছে যা আপনার মাথার চুল অতিরিক্ত পড়া থেকে বন্ধ করতে পারে। নারকেলের তেলের উপকারিতা যেমন:

১. নারকেল তেলের মধ্যে ও কিছু পরিমাণ মেথি এলোভেরা নিম পাতা মিশন করে অল্প আছে চুলায় গরম করে ঠান্ডা করে বোতলে সংগ্রহ করে রাখতে হবে। এবং এই মিশ্রণটি অন্তত সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে আপনার মাথার অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

২. অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে নারিকেলের তেলে সঙ্গে কালোজিরা মিশিয়ে সংরক্ষণ করুন এবং সকল নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করুন।

৩. আপনি যদি নারকেলের তেলের সঙ্গে কিছু পরিমাণ কাঠ বাদাম মিশিয়ে রাখেন তাহলে অবশ্যই আপনার অতিরিক্ত চুল পড়ার উপায় হিসেবে কার্যকারী সমাধান দিবে এটি।

৪. আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা প্রতি তিক্ত চুল পড়ার কারণ হিসেবে শুষ্ক চুলকে দায়ী করে। সাধারণত নারিকেলের তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে রাখলে শুষ্ক অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করার উপায় হিসেবে কাজ করে। কিন্তু অবশ্যই আপনাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে যে সর্বোচ্চ 20 মিনিটের বেশি যেন তেলটি মাথায় না থাকে।

ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধ - ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম

আমাদের মধ্যে অনেক ছেলে আছে যারা নিজের মাথার চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন ওষুধ খুঁজে থাকেন। কিন্তু আপনার মাথার চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আপনি যে ওষুধে সেবন করুন না কেন এতে আপনার জন্য ও আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে না। আপনার জন্য ও আপনার শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী হল প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনার চুল পড়া বন্ধ করা। এই জন্য এ সকল বিষয়ে জানার পর আপনি অবশ্যই আপনার স্বাস্থ্য ও আপনার চুলের জন্য কখনোই কোন ওষুধ সেবন করবেন না। চেষ্টা করবেন ঘরোয়া পদ্ধতিতে ও প্রাকৃতিক নিয়মে আপনার মাথার অমূল্য চুল আগের মতন সুস্থ করার জন্য। চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম জানতে পোস্টটি পড়তে থাকুন।

ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম- চুল পড়া বন্ধ করার প্রাকৃতিক উপায়

চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চুলে ব্যবহার করতে পারেন সরিষার তেল। নিয়মিত তেল ব্যবহার প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। সরিষার তেলে আপস রেডি এসিড থাকায় এই তেলটি ব্যবহারে আপনাদের চুলের স্বাস্থ্য এবং চুল দ্রুত বাড়বে।

সরিষার তেলে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন , আইরন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সহ বিভিন্ন মিনারেল ও ভিটামিন। যা চুল লম্বা ও মজবুত করতে সাহায্য করে।

আসুন এবার দেখে নেয়া যাক কিভাবে আপনি চুলে সরিষার তেল ব্যবহার করবেন?

১. সরিষার তেল লেবুর রস ও ধনিয়া গুড়া ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে মাখন। সুলে মাখার পর আধাঘন্টা পরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার চুল মজবুত ও খুশকি মুক্ত থাকবে।

২. সাধারণত টক দই ও সরিষার তেলে মিশিয়ে চুলে গোড়ায় লাগিয়ে তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে মাথায় পেচিয়ে রাখুন। এবং এরপর আধাঘন্টা পর দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে এক সপ্তাহ ১ থেকে দুবার ব্যবহার করতে হবে।

৩. সরিষার তেল এবং অ্যালোভেরা চুলে লাগিয়ে রাখুন অন্তত ৪০ মিনিট। এভাবে সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করতে থাকুন।

নতুন চুল গজাতে কতদিন সময় লাগে- নতুন চুল গজানোর বৈজ্ঞানিক উপায়

আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পন্ন করে এই পর্যন্ত আসেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন আপনার মাথার চুল পড়া বন্ধ করার জন্য কি কি করতে হবে বা করণীয়। আপনি যদি আমাদের সকল প্রক্রিয়া অবলম্বন করে থাকেন তাহলে অবশ্যই দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরে আপনার মাথার চুল গজানো শুরু হয়ে যাবে। এই পোস্টে আমরা যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি তা নতুন চুল গজানোর বৈজ্ঞানিক উপায় ও বটে।

আশা করি আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পন্ন করে থাকেন। তাহলে আজকের পর থেকে আপনার মাথার চুল পড়া সমস্যা অতিরিক্ত চুল ঝরে যাওয়া সমস্যা এবং ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর উপায় সকল সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url